পটলা ইংরেজি ক্লাসে পেছন বেঞ্চে মাথা নিচু করে বসে আছে---
শিক্ষক- অ্যাঁই পটলা! এদিকে আয়। মাথা নিচু করে ভেবেছিস পার পেয়ে যাবি।
(পটলা বেগতিক দেখে শিক্ষকের কাছে কাচু-মাচু মুখ করে গেল)
পটলা- বলুন স্যার!
শিক্ষক- স্যার! বলি হোমওয়ার্কের খাতাটা কই?
পটলা- স্যার, সেটা তো আনা হয়নি, আমি সোমবার নিয়ে আসব।
শিক্ষক- ফাঁকিবাজি তোর বের করছি। বল 'ক্যাট' মানে কী?
পটলা- জানি না স্যার! শিক্ষক- কি জানিস তাহলে? বল 'ভালুক'-এর ইংরাজি কী?
পটলা- তা তো জানি না!
শিক্ষক- (আচমকাই পটলার কানটা হিরহির করে টেনে দিল, তারস্বরে চিৎকার করছে পটলা, আর বলে যাচ্ছে ছেড়ে দিন স্যার, এমনই সময় পিরিয়ড শেষ হওয়ার ঘণ্টা বেজে গেল) আজ পার পেয়ে গেলি। সোমবার দ্বিতীয় পিরিয়র্ড আমার। ক্যাট, ম্যাট,বিয়ার, এলিফ্যান্ট-এই ৫টি শব্দের মানে মুখস্থ করে আসবি।
(পটলা অত্যন্ত বিনয়ীভাবে- হ্যাঁ স্যার আপনি নিশ্চিন্ত থাকুন আমি করে নিয়ে আসব।)
(সোমবার স্কুলে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়েছে পটলা, আচমকাই খেয়াল পড়ল ইংরাজী স্যার-এর দেওয়া পাঁচটি শব্দের মানে সে মুখস্ত করেনি, দৌড়ে বাড়িতে ঢুকল পটলা)
পটলা- মা-মা আমাকে শিগগিরি একটা শব্দের মানে বল তো?
(রান্না ঘরে লুচি ভাজছিলেন মা)
মা- (প্রবল বিরক্তির মুখ নিয়ে) আমার হাতে এটা কি?
পটলা-- 'খুন্তি'!
মা- কড়াইয়ে কী?
পটলা- 'লুচি'!
মা- এটা কী?
পটলা- 'ডালডা'!
মা- লিখে নাও।
(পটলা মন দিয়ে স্কুলের খাতায় 'ক্যাট' মানে 'ডালডা' লিখে রেখে দিল। এরপর সে গেল বাবার কাছে। বাবা নবান্নের ব্যস্ত অফিসার। লেট হয়ে গিয়েছে তাঁর। এরই মধ্যে পটলা গিয়ে বাবা-র পায়ে ড্রাইভ মারল।)
পটলা- বাবা, প্লিজ আমাকে 'ম্যাট'-এর নাম বল। না'হলে স্কুলে মার খেতে হবে।
বাবা- (অতকথায় কান না দিয়ে শুধু পটলার কীতকর্মে বিরক্তি প্রকাশ করে বললেন) 'ননসেন্স'।
(পটলা ননসেন্স শব্দটাকে 'ম্যাট'-এর পাশে লিখে রাখল। এরপর পটলা গিয়ে হাজির পুজোর বাজারে ব্যস্ত দিদি-র কাছে)
পটলা- দিদি! 'বিয়ার'-এর মানেটা একটু বলে দে না।
দিদি- (পুজোর বাজার নিয়ে ব্যস্ত, তাঁকেও বেরতে হবে) 'নো-টাইম'!
(পটলা তার খাতায় 'বিয়ার'-এর মানে 'নো-টাইম' বলে লিখে রাখল। এরপর পটলা হাজির ইংরাজি অনার্সের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র দাদা-র কাছে।)
পটলা- দাদা-দাদা তুই আমাকে উদ্ধার করতে পারিস। প্লিজ আমাকে এলিফ্যান্ট-এর মানেটা বলে দে।
(পটলার দাদা কোনও উত্তরই দিল না। সে মন দিয়ে তখন একটা নভেল পড়তে ব্যস্ত। কোনও উত্তরই করল না। পটলা দেখল বইয়ের গায়ে 'আই অ্যাম আ গ্রেটম্যান ' লেখা। পটলা 'এলিফ্যান্ট'-এর পাশে 'আই অ্যাম আ গ্রেটম্যান' বাক্যটা লিখে নিল।
(পটলা ইংরাজী ক্লাসে একদম সামনের বেঞ্চে বসে আছে)
শিক্ষক- পটলা এদিকে আয়। বল 'ক্যাট' মানে কী?
পটলা- (খুব কনফিডেন্স নিয়ে) 'ডালডা'!
শিক্ষক- (সপাটে চড় পটলা-কে) কোথা থেকে শিখেছিস এসব?
পটলা- স্যার! আমাকে মারবেন না। আমি সব শব্দের মানে জেনে এসেছি। আপনি দ্বিতীয় ইংরাজি শব্দটি বলুন।
শিক্ষক- বল 'ম্যাট'-এর মানে কী?
পটলা- 'ননসেন্স'!
(শিক্ষকের এবার ভিড়মি খাওয়ার জোগাড়। তিনি কলার ধরে পটলাকে টানতে টানতে প্রধানশিক্ষকের ঘরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে লাগলেন)
(পটলা এরপরও তাঁর শেখা ইংরাজি শব্দের মানে একটার পর একটা আওড়ে যেতে লাগল, এদিকে শিক্ষক একথা বলছে, আর পটলা তার উত্তর করতে গিয়ে তার খাতায় লেখা শব্দগুলো বলে যাচ্ছে।)
শিক্ষক- চল তোকে আজ প্রধানশিক্ষকের ঘরে নিয়েই যাব।
পটলা-- 'নো-টাইম'!
(ইংরাজির শিক্ষক আরও রেগে গেলেন।)
শিক্ষক- তবে রে! হতচ্ছাড়া! তুই নিজেকে কি ভাবিস?
(শিক্ষকের হাতে মার খেতে খেতে পটলা তারইমধ্যে যা বলল, তাতে ক্লাসের ছাত্রদের মধ্যে তীব্র হাসির রোল)
পটলা বলে উঠল -- 'আই অ্য়াম আ গ্রেট ম্যান'
(হতবাক শিক্ষক এবার ডাস্টার দিয়ে সমানে পটলার পিঠের উপরে খানকতক কষিয়ে দিলেন।)
😆😆😆😆😆😆